ISLAMIA HOSPITALS BANGLADESH

দীর্ঘক্ষণ স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকার ফলে আমাদের চোখের উপর বিভিন্ন নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। এর মধ্যে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য প্রভাব হল:

চোখের ক্লান্তি: দীর্ঘক্ষণ স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকলে চোখের পেশীগুলোতে ক্লান্তি দেখা দেয়। এর ফলে চোখে ব্যথা, ঝাপসা দৃষ্টি এবং মাথাব্যথা হতে পারে।
শুষ্ক চোখ: স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকলে আমরা কম বার পলক ফেলতে থাকি। এর ফলে চোখ শুষ্ক হয়ে যেতে পারে। শুষ্ক চোখের ফলে চোখে জ্বালাপোড়া, চুলকানি এবং লালভাব দেখা দিতে পারে।
কম্পিউটার ভিশন সিনড্রোম (CVS): CVS হল স্ক্রিন টাইমের সাথে সম্পর্কিত একটি অবস্থা। এর লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে চোখের ক্লান্তি, শুষ্ক চোখ, ঝাপসা দৃষ্টি, মাথাব্যথা এবং ঘাড়ের ব্যথা।
ডিজিটাল আই স্ট্রেইন: ব্লু লাইট, যা ইলেকট্রনিক ডিভাইসের স্ক্রিন থেকে নির্গত হয়, তা চোখের ক্ষতি করতে পারে। এটি ম্যাকুলার ডিজেনারেশন এবং ছানির ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
ঘুমের সমস্যা: ব্লু লাইট মেলাটোনিন নামক হরমোনের উৎপাদনকে ব্যাহত করতে পারে, যা ঘুম নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এর ফলে ঘুমাতে সমস্যা হতে পারে।

তাহলে কি স্ক্রিন টাইম সম্পূর্ণ এড়িয়ে চলা উচিত?

না, এমনটা নয়। আধুনিক জীবনে স্ক্রিন টাইম এড়িয়ে চলা প্রায় অসম্ভব। তবে, কিছু সতর্কতা অবলম্বন করে আমরা স্ক্রিন টাইমের ক্ষতিকর প্রভাবগুলোকে অনেকাংশে কমিয়ে আনতে পারি।

চোখের ক্ষতি থেকে রক্ষা করার জন্য কিছু টিপস:

20-20-20 নিয়ম অনুসরণ করুন: প্রতি 20 মিনিট অন্তর 20 সেকেন্ডের জন্য 20 ফুট দূরের কোনো বস্তুর দিকে তাকান। এটি চোখের পেশীগুলোকে আরাম দিতে সাহায্য করবে।
স্ক্রিনের আলো কমিয়ে দিন: আপনার ডিভাইসের স্ক্রিনের আলো কমিয়ে দিন এবং ব্লু লাইট ফিল্টার ব্যবহার করুন।
বারবার পলক ফেলুন: স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকাকালীন সচেতনভাবে বারবার পলক ফেলুন।
চোখের বিরতি নিন: প্রতি ঘন্টায় অন্তত 5 মিনিটের জন্য স্ক্রিন থেকে বিরতি নিন।
চোখের ব্যায়াম করুন: চোখের পেশীগুলোকে শক্তিশালী করতে এবং চোখের ক্লান্তি কমাতে নিয়মিত চোখের ব্যায়াম করুন।
নিয়মিত চোখ পরীক্ষা করুন: নিয়মিত চোখ পরীক্ষা করিয়ে নিন যাতে কোনো সমস্যা শুরু হওয়ার আগেই তা ধরা পড়ে।
চোখের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করুন: ভালো আলোতে কাজ করুন এবং নিশ্চিত করুন যে আপনার কম্পিউটারের স্ক্রিনটি আপনার চোখের সমতলে আছে।
ধূমপান ত্যাগ করুন: ধূমপান চোখের জন্য ক্ষতিকর।
স্বাস্থ্যকর খাদ্য খান: এমন খাবার খান যা ভিটামিন এ এবং লুটেইন সমৃদ্ধ।
পর্যাপ্ত ঘুম ঘুমান: প্রতি রাতে 7-8 ঘন্টা ঘুমান।
মনে রাখবেন: যদি আপনার চোখে কোনো অস্বস্তি অনুভব করেন, তাহলে দ্রুত একজন চোখের ডাক্তারের সাথে দেখা করুন।

এই টিপসগুলো অনুসরণ করে আপনি আপনার চোখকে স্ক্রিন টাইমের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা করতে পারেন।

আশা করি এই লেখাটি আপনাদের জন্য তথ্যপূর্ণ ও সহায়ক হয়েছে।